প্রিন্ট এর তারিখঃ সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩, ৪:০৯ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ আগস্ট ১৬, ২০২৩, ৮:৩৫ অপরাহ্ণ
বেনাপোল শুল্ক ও গোয়েন্দা তদন্ত সার্কেলের ডিসি আরেফীন জাহেদীর বিরুদ্ধে হয়রানি ও ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ
মহাপরিচালক বলেছেন তার বিরুদ্ধে লেখেন ব্যবস্থা নিব
ওবাইদুল ইসলাম অভি,যশোর
বেনাপোল শুল্ক ও গেয়েন্দা তদন্ত সার্কেলের ডিসি আরেফীন জাহেদীর বিরুদ্ধে হয়রানি ও নানাভাবে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। তিনি বেনাপোলে যোগাদানেরও পরথেকেই ব্যবসায়ীরা মারাত্মকভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।
শুল্ক গোয়েন্দার ডিসির কাজ হচ্ছে বড় ধরনের শুল্ক ফাঁকি ধরা। কিন্ত তিনি তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করে অধিকাংশ পন্যচালান লক করে রাখেন। কাস্টমস কর্মকর্তারা একটি পন্য চালান শতভাগ পরীক্ষন কাজ সম্পন্ন করার পর ডিসি আরেফীন ঐ পন্যচালান লক কওে দেন। পরে একই পন্য চালান ফের শুল্ক গেয়োন্দারা শতভাগ পরীক্ষন করেন ৪/৫দিন ধরে। ফলে একটি পণ্য চালান ২ বার শতভাগ পরীক্ষন করায় পন্যেও গুনগত মান নস্ট হয়ে যায়। ফলে ব্যবসায়ীরা রাজস্ব জমা দিয়ে তাদের পন্যচালান খালাশ করে বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে পারেননা। পরীক্ষনের সময় প্রতিটি প্যাকেজ কেটে ছিড়ে পরীক্ষা করায় নস্ট হয় প্যাকেজ। ফলে কাটা ছেড়া প্যাকেজর পন্য ক্রেতারা কিনতে চান না। এ কারণে ব্যবসায়ীদের মোটা অংকের অর্থিক লোকসান হচ্ছে।
শুল্ক গোয়েন্দারা কোন পন্যচালান দেখতে চাইলে তারা কাস্টমস এর সাথে যৌথভাবে পরীক্ষ্ণ করলে একই প্যাকেজ বারবার কাটাছেড়া করা লাগে না। ৩/৪ দিনেই একটি চালান পরীক্ষন কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব।
শুল্ক গোয়েন্দাদের এ ধরনের হয়রানির কারনে অধিকাংশ আমদানিকারকরা এই বন্দর ছেড়ে এখন একই পন্য কোন ঝুকি ছাড়াই চোরাই সীমান্ত পথে চোরাচালানের মাধ্যমে নিয়ে আসছে। ফলে সরকারের মোটা অংকের রাজস্ব হাতছাড়া হচ্ছে।
গত ৫ জুলাই ভারত থেকে আমদানি করা দুটি মাছের চালান আটকে ৮ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে রাতের আধারে কাস্টমস কর্মকর্তাদের অবহিত না করে গোপনে ছেড়ে দেন ডিসি আরেফিন জাহেদী। বিষয়টি জানাজানি হলে কাস্টমস একজন যুগ্ন কমিশনার মাছের ফাইল গুলোতে ৩দিন পর শুল্ক গোয়েন্দা ডিসি আরেফীনের বিরুদ্ধে ৩ পৃষ্ঠার একটি নোট লেখেন। যে সব পন্য চালান শুল্ক গোয়েন্দা পরীক্ষন করেন সেসব প্রতিটি চালান থেকে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টা পর্যন্ত ঘুষ আদায় করে থাকেন বলে অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো।
বেনাপোল আমদানি-রফতানি কারক সমিতির সহ সভাপতি আমিনুল হক জানান,শূুল্ক গোয়েন্দার ডিসি আরেফীন জাহেদী যোগদানের পর ব্যবসায়ীদের হয়রানির মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি প্রায়শ:ই পন্যচালান লক করে কাস্টমস কে অবহিত না করে ৪/৫ দিন ধরে শতভাগ পরীক্ষনের নামে হয়রানি করে সেই সাথে গুনতে হয় মোটা অংকের টাকা। টাকা ছাড়া কোন কাজ হয়না।
শার্শা উপজেলা দূর্নীতি দমন কমিটির সাধারন সম্পাদক আসাদুজ্জামান লেটো জানান, বেনাপোল শুল্ক গোয়েন্দার ডিসি আরেফীন ব্যবসায়ীদের নানাভাবে হয়রানি করেন, তার বিরুদ্ধে ঘুষ আদায়ের অভিযোগ আমরা পেয়েছি। আমরা জরুরী ভাবে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেব।
বেনাপোল শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত সার্কেলের ডিসি আরেফিন জাহেদীর সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিককে জানান, আপনি কে, সব বিষয়ে আপনার সাথে কথা বলতে হবে? তিনি বলেন আমরা যথা নিয়মে কাজ করছি। ঘুষ বানিজ্যের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার অফিসে আসেন, কথা হবে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার আব্দুল হাকিম জানান, শুল্ক গোয়েন্দা যে দুটি মাছের চালান আটক করে আবার ছেড়ে দিয়েছেন, সে বিষয়টি আমাদেরকে জনানো হয়নি। ফাইল আমাদের কাছে আসলে আমরা ব্যবস্থা নিব।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদšত অধিদফতরের মহাপরিচালক ফকরুল ইসলাম জানান, বেনাপোল শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত সার্কেলের ডিসি আরেফিন জাহেদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে আপনারা লেখেন, আমরা ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
কপিরাইট © টাইম ভিশন-২০২২ । সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত