
প্রশাসন ও আইন শৃংখলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি
টাইমভিশন২৪,যশোর অফিস: যশোরের চৌগাছায় প্রশাসন ও আইন শৃংখলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে নির্বিচারে কাটা হচ্ছে পাকা সড়কের মূল্যবান গাছ। গাছখেকোদের কোনক্রমেই থামানো যাচ্ছেনা। বিভিন্ন পাকা সড়কে কৌশলে গাছ কাটা অব্যহত রেখেছে। প্রশাসন ও আইন শৃংখলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে গাছ কাটার চালানো হচ্ছে। নির্বিচারে গাছ নিধনের ফলে
পুলিশ বাহিনী, বনবিভাগ ও প্রশাসনের আশু দৃষ্টি কামনা করেছেন এলাকার সচেতন মানুষ। জানা গেছে, চৌগাছা-কাশিপুর, চৌগাছা-পুড়াপাড়া, চৌগাছা-কোটচাঁদপুর, চৌগাছা-যশোর, চৌগাছা- ঝিকরগাছা, চৌগাছা-মহেশপুর পাকা রাস্তার দু’পাশে এক দেড় দশক আগে জেলা পরিষদের কয়েক হাজার বিভিন্ন প্রজাতির বনজ গাছ রোপন করা হয়। গাছগুলো এখন অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। অধিকাংশ গাছের মূল্য প্রায় ২০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত। কিন্তু স্থানীয় কতিপয় দুর্বৃত্ত গাছখেকোরা সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে রাতে গাছের বাঁকল চারিপাশ গোলাকৃতিভাবে কেটে দিচ্ছে।
গাছের গোড়া থেকে দেড় থেকে দুই হাত উপরে এমনটি করা
হচ্ছে। এমনকি গাছের গোড়ায় রাসায়নিক সার অতিমাত্রায় ব্যবহার করা হচ্ছে। সেই সাথে দেয়া হচ্ছে লবন। এসব পদ্ধতির ফলে
ধীরেধীরে কিছুদিনের মধ্যে গাছ শুকিয়ে মারা যায়। পরবর্তীতে ওই গাছ রাতে মেরে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হয় বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। সরজমিন গাছ পরিদর্শনে গেলে দুর্বৃত্তদের নিষ্ঠুরতার প্রমান পাওয়া যায়। চৌগাছা-ঝিকরগাছা পাকা সড়কের চানপুর থেকে গরীবপুর, ডেকিঁপোতা থেকে কাবিলপুর, চাঁদপাড়া থেকে ফাঁসতলা, মুলিখালি বটতলা থেকে ফতেপুর বাজার, পৌর সদরের ইছাপুর বটতলা থেকে পাতিবিলা, কয়ারপাড়া থেকে সলুয়া বাজারের রাস্তার দুই পাশে বড় বড় রেইনটি কড়াই গাছের অবস্থান। দুুই-তিন কিলোমিটার ব্যবধানে কমপক্ষে ৫ থেকে ১৫ টি করে রেইনটি কড়াই গাছ কাটা হয়েছে। প্রতিটি গাছ প্রায় ৩০ হাজার
থেকে লক্ষাধিক টাকার মূল্য রয়েছে। দেখা গেছে, দুর্বত্তরা কিছুকিছু গাছের নিচের অংশে ১/২ ফিট উপরে গোলাকৃতিভাবে গাছের বাকল কেটে ফেলেছে। গাছের ডালপালাও কেটে ফেলা হচ্ছে। এখানে ৮টি গাছ গোড়া থেকে কেটে নেয়া হয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, রাস্তার পাশের জমির মালিকরা স্থানীয় গাছকাটা চক্রের মাধ্যমে এই গাছ পরিকল্পিতভাবে কাটছে। রাতের
আঁধারে কৌশলে তারা গাছ কাটার সাথে যুক্ত। শুধু তাই না, এ সড়কের পৌর এলাকার ঋষিপাড়ার পাশেই একটি বড় কড়াই গাছের চারপাশের বাঁকল এমনকি গাছের কান্ড নিখুঁত ভাবে কাটা হয়। এছাড়া ফতেপুর সড়কের বাওড়ের দু’ধারে ইতোপূর্বে ১০টি
কড়াই ও সেগুন গাছ সাবাড় করে গাছখেকোরা।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, বাইরের লোকজন এ কাজ করতে আসিনি। স্থানীয় দুর্বৃত্তরা বিভিন্ন কৌশলে এ কাজ করছে। রাতেই সংঘবদ্ধরা দ্রæত গাছ কেটে মাঠের মধ্যে বিভিন্ন ফসলি জমিতে নিয়ে রাখে। পরবর্তীতে সুযোগ বুঝে তা বিক্রি করে। এদিকে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, রাস্তার মূল্যবান গাছ কাটার জন্য রাস্তার ধারের জমির মালিকরা বেশী দায়ী। তারা এই গাছকে বিষফোঁড়া মনে করে সঙ্গবদ্ধ চক্রের সাথে আতাতের মাধ্যমে গাছ নিধন করছে। এর সাথে মিল মালিক বা কাঠ ব্যবসায়ীদের যোগাযোগ আছে বলেও অনেকে জানান। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাতে কে বা কারা বিভিন্ন কৌশলে গাছগুলো কাটছে। বিষয়টি থানার ইনচার্জ সাথে আলোচনা করে টহল বৃদ্ধি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহন করবো এবং কে বা কারা এধরনের কর্মকান্ডের সাথে জড়িত বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
